বিকাশ পিন লক খোলার উপায়
পরপর ৩ বার বিকাশের PIN ভুল টাইপ করলে একাউন্ট লক কিংবা পিন লক হয়ে যায়। এমতাবস্থায় “বিকাশ পিন লক হয়ে গেছে, করণীয় কী?” সে বিষয়ে জানতে চান অনেকেই।
বিকাশের পিন লক হয়ে গেলে কি করতে হবে এবং কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব সহজেই পিক লক খোলা যাবে সেই সব উপায় নিয়েই বিস্তারিত থাকছে এই আর্টিকেলে। আমরা নিশ্চিত করছি, পুরো আর্টিকেলটি পড়লে আপনি নিজেই বিকাশ একাউন্টের লক হয়ে যাওয়া পিন খুলতে সক্ষম হবেন।
বিকাশ পিন লক হলে করণীয়
যদি আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন লক হয়ে যায় তবে আপনার সর্বপ্রথম কাজ হলে লক খোলার ব্যবস্থা করা। কেননা, লক না খোলা অব্দি আপনি বিকাশ একাউন্টে কোনো ট্রানজেকশন কিংবা একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন না, এমনকি একাউন্টে লগিনই করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনি তিনটি প্রসেস অনুসরণ করতে পারেন:
- কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে উক্ত সমস্যার কথা বলে সেখান থেকে পিন ঠিক করা।
- USSD ডায়াল করে বিকাশ পিন লক খোলা।
- Bkash App থেকে বিকাশ পিন লক খোলা।
পরবর্তী ধাপ গুলোতে আমরা এই উভয় পদ্ধতি সম্পর্কেই বিস্তারিত জানাবো।
বিকাশ পিন লক খোলার উপায়
বিকাশ পিন লক হয়ে গেলে সর্বমোট ৩টি পদ্ধতিতে তা সমাধান করা যায়। এই পর্যায়ে এই ৩টি পদ্ধতি সম্পর্কেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরছি। এছাড়া যারা ভাবছেন “বিকাশ পিন ভুলে গেলে করনীয় কী?” তাদের জন্যও এই পদ্ধতিগুলো।
কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে বিকাশ পিন লক খোলার উপায়
আমার মনে আছে, বেশ কিছু বছর আগে পরপর ৩ বার ভুল PIN এন্ট্রি করার ফলে আমার বিকাশ একাউন্ট লক হয়ে গিয়েছিলো আর তখন সরাসরি কাস্টমার কেয়ার যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিলো না।
তখন নিকটবর্তী কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে “পিন লক” এর সমস্যার কথা বলার পর সেখান থেকে একাউন্ট সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাস করে এটা ভেরিফাই করতে যে, একাউন্টটি কি প্রকৃতপক্ষে আমার কি-না।
সঠিক ভাবে প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেয়ার পর আমার কাছ থেকে NID কার্ডের ফটোকপি, দুই কপি ছবি ও বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন নিয়ে একটি ফরম পূরণ করতে দেয়া হয়। ফরম পূরণ করার পর ১৫ মিনিটের মধ্যে একাউন্টের পিন ঠিক করে দেয়া হয়।
মূলত এই পদ্ধতির মাধ্যমেই কাস্টমার কেয়ার থেকে বিকাশ পিন লক খোলা যায়। এখানে আপনার প্রয়োজন হবে NID কার্ডের ফটোকপি, ২ কপি ছবি, ফিংগারপ্রিন্ট ও নিদিষ্ট ফরম পূরণ।
তবে আপনি যদি এইসব ঝামেলার মধ্যে না গিয়ে অল্প কিছু সময় ব্যয় করে সহজেই বিকাশ পিন লক খোলার উপায় খুজে থাকেন তবে পরের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করুন।
আরও জানুনঃ বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়মUSSD ডায়াল করে বিকাশ পিন লক খোলার উপায়
এবার জানাবো যেকোনো মোবাইল থেকে USSD কোড ডায়াল করে বিকাশ পিন লক খোলার উপায় সম্পর্কে। খুব সহজেই কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করেই আপনি উক্ত কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন। আসুন, জেনে নেই..
প্রথমেই ফোনের Dial Pad থেকে *২৪৭# ডায়াল করে নিন বিকাশ নিবন্ধিত সিম নাম্বার থেকে।
অনেক গুলো অপশন দেখতে পারবেন, সর্বশেষ নাম্বারে দেখবেন Reset PIN এবার ১০ টাইপ করে সেটি সিলেক্ট করুন এবং Send বাটনে ক্লিক করুন।
এবার আপনার কাছ থেকে NID/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার জানতে চাওয়া হবে। আপনি যেটি দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলেছেন সেই নাম্বারটি প্রদান করুন এবং Send বাটনে ক্লিক করুন।
এবার আপনার জন্মসাল টাইপ করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।
অনেক গুলো অপশন আসবে যেখানে জানতে চেয়েছে যে, লাস্ট ৯০ দিনে আপনি কোনো ধরণের লেনদেন করেছেন কি-না। যদি করে থাকেন তবে সেটি টাইপ করুন, আর যদি কোনো লেনদেন না করেন তবে ৭ নাম্বার টাইপ করুন।
ধরে নিচ্ছি আপনি ৯০ দিনে একটি হলেও লেনদেন করেছেন। টিউটরিয়ালের সুবিধার্থে মোবাইল রিচার্জ ধরে নেয়া হচ্ছে।
এবার ঠিক কত টাকার মোবাইল রিচার্জ করেছিলেন সেই এমাউন্টটি দিবেন। যদি অন্য কোনো লেনদেন করেন তবে সেটা কত এমাউন্ট ছিলো সেটি জানাতে হবে।
সবশেষে, আপনাকে একটি থ্যাংক ইউ ম্যাসেজ দিবে। যার কিছুক্ষন পরেই আপনার নাম্বারে একটি SMS আসবে।
SMS এ জানানো হবে যে আপনার পিন রিসেট প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছে। এবং একটি Temporary PIN দেয়া হবে। পাশাপাশি আরো নির্দেশনা দেয়া হবে ৭২ ঘন্টার মধ্যে *২৪৭# ডায়াল করে নতুন PIN রিসেট করে ফেলার জন্য।
অনুরূপভাবে *২৪৭# ডায়াল করুন।
এবার কেবল একটি অপশনই দেখাবে তাই ১ টাইপ করে সেন্ড করুন।
আবার ১টি অপশন দেখাবে Change PIN এর, তাই ১ টাইপ করুন।
এবার OLD PIN দিতে বলা হবে। উল্লেখ্য যে, এখানে OLD PIN বলতে বুঝানো হয়েছে SMS এর মাধ্যমে বিকাশ যে Temporary PIN আপনাকে পাঠিয়েছে সেটিকে। উক্ত পিনটি সাবমিট করে Send বাটনে ক্লিক করুন।
এবার ৫ ডিজিটের নতুন PIN নাম্বার দিন।
নতুন PIN টি আবার টাইপ করুন।
এবার একটি বার্তা দেখাবে যে, আপনার PIN চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। এবার আপনি আপনার একাউন্টে লগিন করতে পারবেন কোনো প্রবলেম ছাড়াই।
ব্যাস, এই ছিলো বিকাশ পিন লক হয়ে যাওয়ার সমাধান। খুব সহজেই পিন রিসেটের মাধ্যমে উক্ত সমস্যার সমাধান করে ফেলা যায়।
Bkash App থেকে বিকাশ পিন লক খোলার উপায়
আপনি যদি USSD কোড ডায়াল না করে বিকাশ অ্যাপ থেকেই পিন লক খুলতে চান তবে নিচের দেয়া পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন।
যেমন বলা তেমন কাজ, ক্লিক করুন “পিন ভুলে গিয়েছেন” অপশনটিতে।
এবার আপনার চেহারা স্ক্যান করতে বলা হবে। স্কিনে আসা নির্দেশনা খুব ভালোভাবে অনুসরণ করবেন।
ক্যামেরা ওপেন হওয়ার পর Animation এর মাধ্যমে আপনার কেমন করতে হবে তা দেখিয়ে দিবে। ফ্রেমের ভেতর আপনার চেহারা রেখে অনুরূপ কাজ চালিয়ে যাবেন।
চেহারা ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে, SMS এর মাধ্যমে একটি অস্থায়ী PIN পাঠানো হবে।
ফোনের SMS সেক্টশন চেক করুন ও ৫ ডিজিটের অস্থায়ী পিন কপি করুন।
বিকাশে অ্যাপে অস্থায়ী পিনটি সাবমিট করুন।
এবার আপনাকে নির্দেশনা দেয়া হবে ৫ সংখ্যান নতুন পিন সেট করার জন্য। নতুন পিন পরপর দুইবার লিখুন এবং “নিশ্চিত করুন” বাটনে ক্লিক করুন।
Note: কখনই সহজ PIN (যেমন – 11111, 00000, 12345) ব্যবহার করবেন না।
ব্যাস, আপনার পিন রিসেট এর মাধ্যমেই বিকাশের লক হয়ে যাওয়া পিন খুলে গিয়েছে। এবার নতুন পিন দিয়ে একাউন্টে লগিন করুন ও লেনদেন করুন।
বিকাশ পিন সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর
বিকাশ একাউন্ট লক হলে কি করব?
*২৪৭# ডায়াল করে পিন রিসেট করুন কিংবা কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন।
বিকাশের পিন কত ডিজিটের হয়?
সাধারণত ৫ ডিজিটের হয়, তবে কেউ চাইলে ৪ ডিজিটেরও রাখতে পারে।
বিকাশের পিন লক হয়ে যায় কেনো?
যদি পরপর ৩ বার ভুল PIN দেয়া হয় কিংবা একাউন্টে যদি অস্বাভাবিক এক্টিভিটিস লক্ষ্যনীয় হয় সেক্ষেত্রে বিকাশ পিন লক করে দেয়।
চুড়ান্ত মন্তব্য
আশা করছি “বিকাশ পিন লক খোলার উপায়” ৩টির মধ্যে যেকোনো একটি অনুসরণ করলেই আপনার লক হয়ে যাওয়া বিকাশ একাউন্ট খুলে ফেলতে পারবেন।
আরও জানুনঃ
- মোবাইল ব্যাংকিংঃ দেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাসমূহের ইতিহাস, সেবাসমূহ, উত্থান ইতাদি।
- বিকাশঃ বাংলাদেশের #১ মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস সম্পর্কে জানুন।